ভোলা হাসপাতালে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্রকরে দালালদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ।। আহত- ৬।

এম এইচ ফাহাদ॥

ভোলা টাইমস্ ডেস্ক  ॥ দ্বীপজেলা ভোলার লাখ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা হচ্ছে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ভোলা সরকারি সদর হাসপাতাল। যদিও বর্তমানে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট পুরাতন ভবনটিতে কোন রকম ঢিলেঢালা ভাবেই চলছে এখানকার চিকিৎসা সেবার কার্যক্রম। স্বল্প খরচে ভালো চিকিৎসা পাওয়ার আশায় অনেকে ভোলার বিভিন্ন অঞ্চল হতে চিকিৎসাসেবা নিতে আসছেন হাজারো মানুষ। তাছাড়া হাসপাতালে নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক,রয়েছে নার্সদের সংকট, নেই চিকিৎসা সেবার জন্যে পর্যাপ্ত বেড। কখনো কখনো রোগীর প্রচন্ড চাপের কারনে অনেকেই বাধ্যহয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন হাসপাতালের ফ্লোরে। যদিও হাসপাতালের প্রবেশ পথে ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল লেখা হলেও নতুন ভবনটির কাজ সম্পন্ন হলেও ১০০ শয্যার পুরাতন ভবনেই চলছে রোগীদের চিকিৎসার সকল কার্যক্রম। সরকারিভাবে ইসিজি,এক্সরে ও অন্যন্য প্যাথলজি পরিক্ষা নিরিক্ষার থাকলেও বঞ্চিত এসব সুবিধা হতে। তাইত এইসকল সেবা পেতে হলে তাদের নির্ভর করতে হয় বাহিরে প্রাইভেট ডায়গোনেস্টিক সেন্টার গুলির উপর। যেকারনে পরিক্ষা নিরিক্ষার জন্যে সাধারন মানুষকে প্রতিনিয়ত হতে হচ্ছে হয়রানি স্বীকার।নতুবা গুনতে হচ্ছে বাড়তি খরচ। যার ফলেই হাসপাতালে বাড়ছে দালালদের আধিপত্য। আবার এই দালালরা শহরের বিভিন্ন ডায়াগনেস্টিক ও ক্লিনিকগুলির ছত্র ছায়ায় থেকে রোগীদের বাগিয়ে নেয় ভোলার বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে। যারফলে নৃত্যদিন দালাল সিন্ডিকেটদের প্রতিযোগিতা এবং তাদের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্রকরে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটনা ঘটে। আর হাসপাতাল তখন দালালদের একটি রনক্ষেত্রে স্থান। সোমবার (২৩ মার্চ) সকাল থেকেই দফায় দফায় সংঘর্ষ এবং দুই গ্রুপের মধ্যে দাওয়া পাল্টা দাওয়া পরিনত হয়ে ভোলা সদর হাসপাতাল হয় রণক্ষেত্র। আর এই সংঘর্ষের ঘটনার জন্মদেওয়া হোতারা স্থানীয় দুটি ক্লিনিকগুলির কমিশনপ্রাপ্ত দালাল। মুলত যারা দুটি সিন্ডিকেট বিভক্ত হয়। এবং ক্লিনিকগুলির জন্যে রোগিকে ভাগিয়ে নিতে সংঘাত জড়িয়ে আধিপত্য বিস্তার করে সংঘর্ষের জন্মদেয়। যার প্রভাব বিস্তার ঘটে ভোলার সদর হাসপাতালে দু-গ্রুপের ক্লিনিক সেন্টারে দালাল সিন্ডিকেটের সাথে। একপর্যায়ে এই সংঘর্ষ বাহিরে থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় হাসপাতালের ভিতরে চিকিৎসা অবস্থায় থাকা সাধারন রোগীরদের কক্ষপযন্ত। যারফলে দুই গ্রুপের দেশী অস্ত্র নিয়ে হামলা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মত ঘটনা ঘটে হাসপাতালে মত একটি স্থানে। এসময় সাধারন রোগীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পরে। এই সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের হামলায় মোট ৬ জন আহত হয়। দালাল সিন্ডিকেট আহতরা মোঃ রবিন,আবুল কাশেম ও আলিফ অপর সিন্ডিকেট আহতরা মোঃ হাছান,সাকিব,ও শফিকুল ইসলাম সফি । খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় পুলিশ সন্দেহ বাজান ৩ জনকে আটক করে। পরে আবার তারা জড়িত না থাকায় ছেড়েও দেওয়া হয়। জানা যায় , ভোলা সদর হাসপাতালে প্রতিদিন চারশ থেকে ৫শ রোগী আসে চিকিৎসা সেবা পেতে । আর এই সকল রোগীদের বিভিন্ন সময় মেডিকেলের চিকিৎসকগন বিভিন্ন পরীক্ষা,নিরিক্ষার ও টেস্ট,দিয়ে থাকেন। আর তখন এরা নিজেদের প্রাইভেট ক্লিনিকে এইসকল রোগিদের ভাগিয়ে নেওয়ার জন্য দালালদের মধ্যে চলে একধরনের প্রতিযোগিতা। আবার কখনো এদের কয়েকটি গ্রুপ বিভিন্ন কৌশলে ক্লিনিকে নিতে অপতৎপরতা চালায়। কেউবা আবার রোগীদের কম খরচে টেস্ট, এক্সরে করার কথা বলে দালালরা তাদের ক্লিনিকে পযন্ত নিয়ে যাওয়া পযন্ত চলে তাদের এই কার্যক্রম। আবার সরকারি কর্মরত বিভিন্ন শ্রেনীর স্টাফ চক্রের সঙ্গে হাসপাতালের কতিপয় কিছু কর্মচারী ও নার্সের মধ্যে জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির সাথেও কমিশন শর্ত বানিজ্যের চুক্তিবদ্ধ হয় অনেকে। আর এ কারণেই আইনশৃংখলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে এদের প্রতিরোধ ও দালাল চক্র আটক করতে চাইলেও অনেকসময় হিমসিম খেতে হচ্ছে বলেও জানায় পুলিশ। এদিকে গোপন তথ্যসূত্র যানা যায় দালাল চক্রগুলির মধ্যে রয়েছে আলাদা আলাদা কতেক শ্রেনীবিন্যাস।যেমন মেডিসিন বিক্রেতার সিন্ডিকেট,বহিরাগত এম্বুল্যান্স চালকদের সিন্ডিকেট,ও ডায়গোনেস্টিক সেন্টারে দালালদের সিন্ডিকেট এসকল সিন্ডিকেট আলাদা কাজ হলেও একজন অপরের সহযোগিতার জন্যে কাজের শেষে উক্ত কমিশনের ভাগ পেয়ে যায়। ভোলা সদর হাসপাতালে প্রায় দির্ঘদিন ধরেই স্থানীয়ভাবে একটি ক্লিনিক নাম এ্যাপোলো ক্লিনিক যদিও সেন্টুর কমিশনে তা সীমাবদ্ধ ছিল।কিন্তু বর্তমানে নতুন ইউনিটি ডায়গনেস্টিক সেন্টারের খোকন পংখি,শফি ও হাসান গংদের নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি দল কয়েকটি গ্রুপে ভাগ হয়ে প্রতিদিন ভোলা সদর হাসপাতালে নতুন একটি শক্ত ইউনিটির কারনে ক্লিনিক ব্যবসার দালালদের সিন্ডিকেট এখন প্রতিষ্ঠান চক্রে রুপ পায়। ভোলার সরকারি হাসপাতালে। তথ্যনিয়ে আরো জানা যায় তারা নানা প্রলোভন দেখিয়ে সাধারন রোগীদের ইউনিটি ডায়গনিস্টিক সেন্টারে নিতে বাধ্যকরে। আর নতুন ইউনিটি ক্লিনিকের দালাল ইউনিটি ধরে রাখতে আবার ছোট,বড়, গ্রুপের সিন্ডিকেটে বিভক্ত হয়। প্রত্যেক টিমের মধ্যে আবার একজন করে স্থানীয় পরিচিত ব্যক্তিকে লিডার বানায় ।যাহাতে হাসপাতালের সংশ্লিষ্টরা এদের বিরুদ্ধে কিছু বলার সাহস না রাখে। রোগীর টেষ্ট হতে ক্লিনিকে যা ব্যবসা হয়,কর্তৃপক্ষ যে টাকা আয় করে,তার শতকরা ৩০ থেকে ৪০ ভাগ কমিশন তারা পায়। এখন নতুন এই ইউনিটি ক্লিনিক হতে ভাল কমিশনের লোভে এবার নারী দালালদের নিয়োগ দেয় নতুন এই ইউনিটি সেন্টারে। বর্তমানে নতুন এই ইউনিটি ক্লিনিকের ইউনিটির কারনে দালালদের রাম রাজত্বর ঘাটি ভোলা সদর হাসপাতাল এখন দালালদের কবলে।যদিও প্রথমদিকে একক রাজত্ব করা এ্যাপোলো এখন হারিয়েছে তার সেই পুরোনো ঐতিহ্য। ভোলার সিভিল সার্জন ডাঃ রতন কুমার ঢালী বলেন,হাসপাতালে বিভিন্ন ডায়াগনেস্টিক সেন্টারের নিয়োগকৃত দালালদের দৌড়াত্ম বেড়ে গেছে। যার ফলে সাধারণ রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। তাই নিত্যই সংঘাত আর আধিপত্য বিস্তারের মাত্রা বেড়েছে বলে তার ধারনা। তাই হাসপাতাল দালালমুক্ত রাখতে ভোলা জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ একান্তভাবে কামনা করেন তিনি।