30 March 2020 , 4:59:56 প্রিন্ট সংস্করণ
বিশেষ প্রতিনিধি,
দৈনিক ভোলাটাইমস্ : : ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড়মানিকা ইউনিয়নের বাংলাবাজার মাছ ঘাট এলাকায় মৎস্য অফিসের অভিযানে মোঃ জাহাঙ্গীর মাঝির নেতৃত্বে মেঘনা নদীতে ঝাটকা ও মা ইলিশ নিধনের অভিযোগে কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর এবার মৎস্য অফিসারকে ম্যানেজ করে বাংলাবাজার এলাকায় প্রতিদিন শত শত নৌকা দিয়ে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জাটকা ও মা ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মৎস্য শিকারে মেতেছে বলে জানায় স্থানীয়রা। সারাদেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস এর প্রভাবের কারণে সবাইকে নিজ নিজ গৃহে কোয়ারান্টিনে থাকার নির্দেশনা থাকলেও বোরহানউদ্দিন মৎস অফিসারের নির্ধারিত দালাল খ্যাত জাহাঙ্গীর মাঝির নেতৃত্ব কালু মাঝি ও আলামিনসহ কতিপয় অসাধু চক্র মিলে জনসচেতনতাকে নিরুৎসাহিত করে স্থানীয় সাধারণ জেলেদেরকে মাছ ধরতে উৎসাহী করে তুলছে। স্থানীয় জেলেরা জানান, বোরহানউদ্দিন উপজেলা মৎস্য অফিসার নাজমুল সালেহীনকে ম্যানেজ করেই জাহাঙ্গীর মাঝির নেতৃত্বে নৌকা প্রতি ২ হাজার টাক করে নিয়ে তিনি মাছ ধরার অনুমতি দেন। আর টাকা না দিলে তিনি মৎস্য অভিযানের সময় ওই জেলেদেরকে ধরিয়ে দেবেন বলে হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করে থাকেন। তারা আরো জানান, বোরহানউদ্দিন উপজেলার যতগুলো মৎস্য ঘাট রয়েছে প্রতিটি ঘাট থেকেই এই মৎস্য অফিসার তার নিজস্ব ঘাটের দালাল দিয়ে প্রতিটি নৌকা থেকে চাঁদা আদায় করে থাকেন। বিশেষ করে মৎস্য অভিযানের সময়ে প্রতিটি ঘাট থেকে চাঁদা উত্তোলন করেন। যার ফলে সরকারি নিষেধাজ্ঞার সময়ে এই মেঘনায় হাজার হাজার নৌকা দেখা যায় মাছ ধরতে ব্যস্ত সময় পার করেন।মাঝেমধ্যে কোস্টগার্ড অভিযান পরিচালনা করলেও মৎস্য কর্মকর্তাদের কোন অভিযান চোখে পড়ে না। তার সহযোগী হয়ে কাজ করছে স্থানীয় কালু মাঝি ও আলামিনসহ কয়েকজন। প্রতিবছরই মৎস্য অভিযানের সময় নদীতে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞাকে পুজি করে টাকার নেশায় মেতে উঠে জাহাঙ্গীর মাঝির নেতৃত্বে এই চক্রটি। প্রশাসন ম্যানেজ করার কথা বলে নৌকা প্রতি চাঁদা আদায় করে নদীতে জেলেদের মাছ ধরারতে উৎসাহ যোগায় এই জাহাঙ্গীর মাঝি। উল্লেখ্য,গত রবিবার (২২ মার্চ) বাংলাবাজার মাছ ঘাটে সরোজমিনে গিয়ে দেখাযায়, নদীতে সকল ধরনের মাছ ধরার নিষিদ্ধ থাকলেও এই ঘাটে মেঘনা নদীতে প্রচুর নৌকা এবং চলছে মাছ ধরার মহাউৎসব। আর ঘাটে বসে জাহাঙ্গীর মাঝি, কালু মাঝি ও আলামিন সহ কয়েকজন মিলে প্রশাসনের দিকে নজরদারি রাখছে। বিকাল চারটার দিকে কোস্টগার্ডের একটি টহল দল অভিযান চালানোর সংবাদ পেয়ে নদীতে থাকা সকল নৌকার মাঝিদেরকে মোবাইল ফোনে অভিযানের খবর পৌঁছে দিয়ে তীরে চলে আসার তাগিদ দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধি মাঝি বলেন, আমাদের কাছ থেকে জাহাঙ্গীর মাঝি ২ হাজার টাকা নিয়ে নদীতে মাছ ধরার অনুমতি দিয়েছেন। প্রশাসন নদীতে অভিযান চালালে আমাদেরকে জাহাঙ্গীর মাঝি সতর্ক করেন। এসময় সাংবাদিকদের সামনে জাহাঙ্গীর মাঝি বলেন, আমি এই এলাকার মৎস্য অফিসের সরকারি মাঝি , নদীতে কোন নৌকা ধরতে হলে আমার অনুমতি লাগবে। আমার অনুমতি ছাড়া অভিযানের সময় নদী থেকে নৌকা ধরলে সেটা ডাকাতি বলে অভিযোগ দায়ের করবো। আমার এলাকায় আমি ছাড়া কোন লোক অভিযানের সময় নৌকা আটকাতে পরবেনা। এ ঘটনায় বোরহানউদ্দিন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুল সালেহীন জানান, আমরা আগে জাহাঙ্গীর মাঝির কাছ থেকে নৌকা নিয়ে অভিযানে যেতাম কিন্তু তার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকায় আমরা এখন আর তার কাছ থেকে নৌকা নিচ্ছি না এবং সে আমাদের কেউ না। সে যদি মৎস্য অভিযান অপরাধের সাথে যুক্ত থাকে তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে