দৈনিক ভোলা টাইমস্ ঃঃ ভোলার বোরহানউদ্দিনের কুতুবা ইউনিয়নের ৪নম্বর ওয়ার্ডের ছোট মানিকা গ্রামের খুচড়া পান বিক্রেতা উজ্জল রায়ের বসতঘর (ভাড়া) পুড়িয়ে ভস্মিভূত করে তাঁকে উচ্ছেদের অভিযোগ পাওয়া গেছে ঘরমালিক লিটন চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে। জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাত ৮ টার দিকে উজ্জল রায়ের ভাড়া বসত ঘরে আগুন লাগে। ওই সময় ঘরে কেউ ছিলনা। উজ্জল রায়ের স্ত্রী আঁখি রাণী, মেয়ে পুনম রায় ও ছেলে প্রিতম রায় ১ কিলোমিটার দূরবর্তী কীর্ত্তনীয় বাড়িতে স্বরসতি পুঁজার অনুষ্ঠানে ছিল। উজ্জল রায় পৌর শহরের পশ্চিম বাজারে পান বিক্রি করছিল। প্রত্যক্ষদর্শী পাশের ঘরের গৃহবধূ পারভিন আক্তার, হাসনা বেগম,ইয়ানুর বেগম জানান, তাঁরা রাত ৮ টার দিকে উজ্জল রায়ের বসত ঘরের উত্তর-পশ্চিম কোন দিয়ে প্রথমে আগুন দেখতে পান। দশ মিনিটের মধ্যে ওই আগুন সারা ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। তারা মোবাইল ফোনে ওই পরিবারের সদস্যদের জানানোর চেষ্টার পাশাপাশি আগুন আগুন বলে চিৎকার করতে থাকে।
এক সময় ফায়ার সার্ভিস আসে, তখন পুড়ে সব শেষ হয়ে যায়। তাঁরা আরো জানান, সকাল ১১ টার দিকে ওই ঘরে সাগু রান্না করা হয় এরপর দুপুরে আর রান্না হয়নি। ওই ঘরে এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ আনেনি। জনমনে প্রশ্ন কীভাবে এই রহস্যময় আগুন লাগলো। ঘরের বাসিন্দা উজ্জল রায় জানান, তাঁরা পৌর শহর ব্যবসায়ী সমিতির উপদেষ্টা লিটন চন্দ্র দাসের মালিকানাধীন ওই ঘরে গত ৮-৯ বছর ধরে পাহারাদার হিসেবে বসবাস করে আসছিলেন। গত ৬-৭ মাস ধরে ১ হাজার টাকা মাসিক ভাড়ায় থাকছেন। ২ মাসের ভাড়াও বাকি আছে। লিটন বিভিন্ন সময়ে ঘর ছেড়ে যেতে বলছিলেন। নদী ভাঙ্গনে ঘর-বাড়ি বিলীন হয়ে যাবার পর কোথাও যাবার উপায় ছিলনা। এছাড়া দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া একমাত্র মেয়ে পুনমকে বিয়ে দেয়া পর্যন্ত সময়টুকু চেয়েছিলাম। কিন্তু সে কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না; বরং চলে যেতে চাপ, হুমকি দিচ্ছিল।
উজ্জল রায় দাবি করেন তাঁকে ঘর ছাড়া করতেই লিটন দাস এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। লিটন চন্দ্র দাস এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রথম থেকেই উজ্জল রায় ৫ শত টাকা মাসিক ভারায় ওই ঘরে থাকে। পরবর্তীতে ১ হাজার টাকা ভাড়া চুক্তি করে। যা একমাস আগেই শেষ হয়ে গেছে। আমার ঘরে আমি আগুন দিব কেন! চুক্তি শেষ, তাঁরতো এমনিতেই নেমে যাবার কথা। উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. রাকিবুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই ঘর পুড়ে যায়। তবে আগুনের সুত্রপাত হিসেবে প্রাথমিকভাবে চুলার আগুনকে মনে করা হচ্ছে। এ বিষয়ে বোরহানউদ্দিন থানার ওসি মো. মাজহারুল আমিন জানান, ঘরমালিক লিটন চন্দ্র দাস একটি অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত চলছে।
Leave a Reply