আনসারীর জানাজায় লকডাউন ভেঙে লাখো মানুষ, যা বলছে প্রশাসন

ভোলা টাইমস ডেস্ক::ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার বেড়তলায় জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসা মাঠে দেশবরেণ্য ইসলামী আলোচক মাওলানা যুবায়ের আহমেদ আনসারী জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।শনিবার সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত এই জানাজার নামাজে লাখো মুসল্লী অংশগ্রহণ করেন।

বর্তমান প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণের জন্য যখন সমগ্র দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ ছাড়া গত ১১ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়।এর মধ্যেও শনিবার যুবায়ের আহমেদ আনসারীর জানাজায় লাখো মানুষ অংশ নেয়ায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বির্তক দেখা দিয়েছে। কীভাবে এত লোকের সমাগম ঘটল। প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আগাম গোয়েন্দা তৎপরতা নিয়ে।

যদিও স্থানীয় প্রশাসন বলছে, ধর্মীয় নেতারা আশ্বস্ত করেছিলেন সীমিত পরিসরে এই জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। যদিও মাওলানা যুবায়ের আহমেদ আনসারী জানাজা নামাজ মাঠে জায়গা না হওয়ায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার অংশে জানাজার নামাজ পড়েন লাখো মানুষ।

এই বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে এখন চলছে দায়সারা বক্তব্য। আবার অনেকেই এই বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের এড়িয়েও যাচ্ছেন।

সরাইল থানার ওসি সাহাদাত হোসেন টিটু জানান, এত মানুষ হবে, আমরা আগে বুঝতে পারিনি। লোকজন আসতে শুরু করার পর আমাদের আর কিছু করার ছিল না।

সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, প্রশাসনের এটি দেখার দরকার ছিল। যখন দেখছে প্রচুর মানুষ আসছে, তখনই বাঁধা দেয়ার দরকার ছিল।

অন্যদিকে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মঈনুল ইসলাম খন্দকার বলেন, আমরা ভাবিনি, এত মানুষ হবে। লোক বেশি হওয়ার জন্য অপেক্ষা করলে আমরা দুপুরে জানাজা করতে পারতাম। লকডাউনের কারণে আমরা জানাজা নামাজের জন্য ছোট জায়গা বেছে নিয়েছি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া র্শীষ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান জামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি মোবারক উল্লাহ জানান, আমরা চেয়েছিলাম ছোট আকারে জানাজা নামাজ করতে। কিন্তু আমাদের অজান্তে মানুষ শ্রদ্ধা নিয়ে জানাজা নামাজে হাজির হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে আমরা ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন চলে এসেছে। সে ক্ষেত্রে কাউকে তো জোর করে পুলিশ গাড়ি থেকে নামিয়ে দিতে পারে না। পুলিশের পক্ষ থেকে লাঠিচার্জ করে কিংবা জোরপূর্বক কিছু করার সুযোগ নেই।

এই ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান সাংবাদিকদের বলেন, তারা আমাদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেননি। বর্তমানে লকডাউন পরিস্থিতি চলছে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে এবং মানুষকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। শুক্রবার তাদের এই বিষয়টি আমরা জানিয়ে দিয়েছিলাম। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন নির্ধারিত নিয়ম মেনেই সীমিত পরিসরে তাদের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন। এখন প্রকৃত বিষয়টি কী, তা আমাকে খতিয়ে দেখতে হবে।