মোঃ সাইফুল ইসলাম আকাশ
সারা দেশে করোনার ভয়াবহ সংক্রমণের মুখে দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যেও ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বিভিন্ন বাজারে কুরবানির পশুর হাটে উপচে পড়া ভিড় দেখা গিয়েছে। হাজার মানুষ লকডাউন আর বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাটে ভিড় জমাচ্ছে ।
এসব হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত না করায় সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকলে ও বোরহানউদ্দিন পৌরসভা সহ, বোরহানউদ্দিনের ৯ টি ইউনিয়নে হাট-বাজারগুলোর ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে সচেতনতা নেই।
প্রশাসনের অভিযানের কথা শুনলেই মাস্ক পরাসহ অন্য বিষয়ে সচেতন হয়ে উঠেন বাজারের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা। প্রশাসনের লোকজন ফিরে গেলে আবার আগের অবস্থায় ফিরে যান তারা। বোরহানউদ্দিনের কাজিরহাট,খাস মহল দেউলা মজম বাজার, রানীগঞ্জ,খায়েরহাট,মানিকার হাট,নুর মিয়ার হাট সহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সপ্তাহে দুইদিন হাট বসে কোরবানির হাটে সেই একই রকম চলছে ।সরেজমিন হাটে গিয়ে দেখা গেছে, পশুরহাটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের অধিকাংশেরই মুখে মাস্ক নেই। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলারও কোন বালাই ছিল না ।
আবার অনেকের মাস্ক থুতনির নিচে, কারও কোমরে আবার কারও পকেটে। হাট বাজারে হাত ধোয়ারও নেই কোনও ব্যবস্থা।
হাটে ঢোকার প্রবেশপথগুলোয় পা ফেলার জায়গা নেই।
প্রশাসনের লোক বা সাংবাদিক দেখলে লোকজনকে তড়িঘড়ি করে মুখে মাস্ক পরতে দেখা গেছে। হাট এলাকার চতুর্দিকে দোকানপাটও খোলা হয়েছে।
ক্রেতারা বলছে সামনে পবিত্র ঈদুল আযহা কোরবানি তো দিতেই হবে এটা ইসলাম ধর্মের সকলের জন্য অবশ্যই দায়িত্ব এবং কর্তব্য।
তারা বলেন সামনে পবিত্র ঈদুল আযহা ঈদ উপলক্ষে একটু সামন্য ভিড় হবেই এতে করার কিছু নেই তবে আমাদের সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা উচিত।
বিনা কারণে সড়কে লোকজন চলাচল করলে পুলিশের জেরার মুখে পরতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।কিন্তু গরুরহাটে গরু ও লোকজন চলাচলে অবাধে চলছে নসিমন-করিমন, ভটভটি, ইজিবাইকসহ ছোট ছোট যানবাহন।
দেখা যায় প্রথমে সংখ্যায় কম থাকলেও বিকেল হওয়ার সাথে সাথে হাজারও ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে সরগরম হয়ে ওঠে গরুর হাট গুলো।
ক্রেতা বা বিক্রেতা সবার অবস্থা একই, মাস্ক ও স্যানিটাইজার ছাড়াই রীতিমতো গায়ে গা মিলিয়ে দাঁড়িয়ে চলছে গরু বেচা-বিক্রি। যেখানে দূরত্ব বজায় রেখে চলতে বার বার বলে যাচ্ছে প্রশাসন। কিন্তু সেখানে একটি সিগারেট খাচ্ছেন দুজনে ভাগ করে আর আড্ডা জমেই চলছে ।
এদিকে লকডাউনের প্রথম তিন দিনে দোকানপাট ও যান চলাচল বন্ধ থাকলেও আজ রবিবার চতুর্থ দিনে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দোকানপাট খুলতে দেখা গেছে।
উপজেলার বোরহানগঞ্জ বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বেশকিছু দোকান খোলা রয়েছে তারা ঈদের কেনাকাটা নিয়ে ব্যস্ত ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বোরহানগঞ্জ বাজার এর সভাপতি নাগর হাওলাদার বলেন আমি যথেষ্ট চেষ্টা করে যাচ্ছি কিন্তু তিন-চারটে দোকান এর মালিক সরকারের দেওয়া বিধি নিষেধ মানছে না, প্রশাসনের কর্মকর্তারা আসলে শাটার বন্ধ করে ফেলে ,আবার চলে গেলে খুলে ফেলে।
তিনি বলেন তাদেরকে বার বার সতর্ক করা সত্ত্বেও তা উপেক্ষা করে দোকান করে যাচ্ছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি সোয়েব আহমেদ বলেন আমরা কোরবানির হাটের জন্য অস্থায়ী হাটের ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছি যেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাকাটা করা যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব সাইফুর রহমান জানান,স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য জনগণকে সচেতন করে যাচ্ছি। লকডাউন বাস্তবায়নে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।