দৌলতখান(ভোলা)প্রতিনিধি ॥
ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের দরিদ্র কৃষক মফিজল হক বেপারির মেয়ে নববধু জান্নাত বেগমকে (১৮) শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে তার স্বামী সহ পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে।
বিছানা থেকে উঠে বসতে অক্ষম নির্যাতিতা জান্নাত জানান, তার স্বামী হারুন, শ^শুর আ: জলিল ও ননদ রুমা বেগম বিভিন্ন ছুতায় তাকে প্রায়ই মারধর করতো। গত কয়েকদিন আগে তার স্বামী হারুন বাপের বাড়ি থেকে পাঁচ লাখ টাকা এনে দেয়ার জন্য বলেন। এতে সে অস্বীকৃতি জানালে বেধড়ক পিটুনি দেয়। এক পর্যায়ে হারুন জান্নাতের পেটে সজোরে লাথি মারলে সে অচেতন হয়ে পড়ে যায়। কোন চিকিৎসা ছাড়াই এর কয়েকদিন পর হারুন জান্নাতকে তার বাপের বাড়ি রেখে চলে যায়।
পরে জান্নাতকে ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। সেই থেকে জান্নাত বিছানা থেকে উঠে দাঁড়াতে বা হাটতে পারছে না। পেটে প্রচন্ড যন্ত্রনায় সারাক্ষণ ছটফট করছে সে। মাত্র দুই মাস হলো বিয়ের বয়স। এখনো হাতে মেহেদির রংও মুছে যায়নি। এরই মধ্যে হারুন গত ৬ জুলাই ভোলার ২ নং ওয়ার্ডের একটি মেরিজ রেজিস্ট্রারের অফিস থেকে তালাকনামা নোটিশ পাঠায়। জান্নাতের বাবা মফিজল হক বেপারী জানান, মাত্র দুই মাস আগে সামাজিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে জান্নাতের বিয়ে দিয়েছিলেন বোরহান উদ্দিন উপজেলার সাচড়া ইউনিয়নের রামকেসব গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে মো: হারুনের সাথে। গত রোজার ঈদের পর জান্নাতকে তার স্বামী হারুন ঢাকায় নিয়ে যায়। মুদী ব্যবসায়ী হারুন তার ব্যবসার প্রসার ঘটাতে পাঁচ লাখ টাকা এনে দিতে উপর্যুপরি জান্নাতকে চাপ দিতে থাকে।
টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালেই তার ওপর চলতো অমানবিক নির্যাতন। সামাজিক প্রথা অনুযায়ী মেয়ের জামাইকে বার আনা স্বর্ণের একটি চেইন ও চার আনা স্বর্ণের একটি আংটি উপঢৌকন দেয়া হয়। দাবি মেটাতে জামাইয়ের চার ভগ্নিপতিকে পোশাকের জন্য বিশ হাজার টাকা দেয়া হয়। এর পরও পাঁচ লাখ টাকা না পেয়ে মেয়ের ওপর নির্যাতন করতে থাকে। আর হারুনকে এসব করতে তার ভগ্নিপতি জাহিদ প্ররোচনা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন জান্নাতের পরিবার।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হারুনের মোবাইল ফোনে ০১৭৮২৯৮১৬৩৫ নাম্বারে বার বার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তাই বক্তব্য দেওয়া সম্ভাব হয়নি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছিলো।