27 April 2020 , 3:19:02 প্রিন্ট সংস্করণ
ভোলায় গত পাঁচ দিনের টানা বর্ষণে তলিয়ে গেছে কৃষকের ফসল। বিশেষ করে ফেলন, মুগ, মরিচ ও সয়াবিনের ক্ষতির আশঙ্কা বেশি করছেন চাষিরা। যে মুহূর্তে কৃষক ফসল ঘরে তুলবেন, ঠিক সেই সময়ে এই বৃষ্টি ভেঙে দিয়েছে তাদের স্বপ্ন। দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন তারা। একদিকে করোনা ভাইরাসের কারণে জীবন-যাপন বিপর্যস্ত। অন্যদিকে, বৃষ্টির কারণে ফসলের ক্ষতি তাদের দিশেহারা করে দিয়েছে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, টানা বর্ষণে কিছু ক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বৃষ্টি আরও অব্যাহত থাকলে ফসলের ক্ষতি হতে পারে। তবে পানি নিষ্কাশনের জন্য কৃষককে প্রয়োজনীয় করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আবহাওয়া অফিস বলছে, গত ২৩ এপ্রিল থেকে সোমবার (২৭ এপ্রিল) পর্যন্ত জেলায় ১৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এতে পানি জমে বেশিরভাগ ক্ষেতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে তলিয়ে গেছে ফসল। টানা বর্ষণে তলিয়ে গেছে ফসল। জানা গেছে, মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বিগত বছরের মতো এবছরও জেলার অন্য এলাকার মতো সদরের ভেলুমিয়া ইউনিয়নে ফেলন, মুগ, মরিচ ও সয়াবিনের ভালো ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলবেন এমন অপেক্ষা করছিলেন তারা। কিন্তু টানা বর্ষণের কারণে বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেত পানিতে ডুবে আছে। সেখানে ৪০০ হেক্টর সয়াবিন, ৬০ হেক্টর ফেলন ও ১০০ হেক্টর মরিচের ক্ষেত ডুবে গেছে। স্থানীয় উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা খোকন চন্দ্র রায় বলেন, বৃষ্টির কারণে সয়াবিন ৭০ ভাগ এবং ফেলন ও মরিচ পুরো ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আমরা কৃষককে প্রয়োজনীয় করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দিচ্ছি। ভেলুমিয়া ইউনিয়নের চন্দ্র প্রসাদ গ্রামের কৃষক ওমর আলী বলেন, এক একর জমিতে মুগ ও ১৬ গণ্ডা জমিতে সয়াবিন চাষ করেছি। এতে উৎপাদন ব্যয় হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে ক্ষেতে পানি জমায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ফেলন গাছে পচন এবং সয়াবিন গাছ হেলে গিয়ে ঝরে গেছে। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এসব ফসলের আবাদ করেছি। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ফসল তলিয়ে যাওয়ায় আমিসহ অনেকেই এখন দিশেহারা। টানা বর্ষণে তলিয়ে গেছে ফসল। আরেক চাষি সিরাজ বলেন, এ বছর ২ কানি জমিতে সয়াবিন, ১ একর জমিতে মুগ ও ৩ গণ্ডা জমিতে ফেলন আবাদ করেছি। বৃষ্টিতে ক্ষেত তলিয়ে গেছে, পানি নিস্কাশন করলেও গাছ নষ্ট হয়েছে গেছে। দু’একদিনের মধ্যে ফলন ঘরে তোলার কথা ছিল। কিন্তু মনে হয় ক্ষেতের অনেক ক্ষতি হবে। তাই দুশ্চিন্তায় কাটছে দিন। এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ হরলাল মধু বলেন, এখন যে অবস্থা আছে, তাতে তেমন ক্ষতির দিকে যায়নি। তবে বৃষ্টি আরও হলে ক্ষতি বেশি হবে। আমরা কৃষককে ক্ষেত থেকে পানি নিষ্কাশন করার পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়াও মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা তৈরি করছে। এবছর জেলায় ৩৭ হাজার ৪১৫ হেক্টর জমিতে মুগ, ১০ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে ফেলন, ১৮ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে মরিচ ও ৯ হাজার ৭৭৯ হেক্টর জমিতে সয়াবিনের আবাদ হয়েছে।