16 May 2020 , 1:54:29 প্রিন্ট সংস্করণ
রমজান মাসে তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমেই মানুষ অন্তরের প্রবৃত্তি তথা নফসে আম্বারাকে বশীভূত করে। আর লাভ করে আল্লাহর নৈকট্য। প্রকৃত রোজা দ্বারাই সমাজ থেকে সকল অন্যায়-অবিচার, জিনা-ব্যভিচার, চুরি-ডাকাতি ও সন্ত্রাসবাদ দূরীভূত হয়। পুরো ব্যক্তিজীবন ও সামাজিক জীবন নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে চলাচলের নিশ্চয়তা লাভ করে। আর রোজা রাখা হয় একমাত্র আল্লাহরই জন্য। এতে কোনোরূপ লোক দেখানো বা রিয়ার কোনো অবকাশ নেই। কেননা হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহতায়ালা ফরমান, ‘রোজা কেবল আমার জন্যই, আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব।’
আর এই রোজাই প্রকৃত রোজাদারকে মিথ্যা বলা থেকে বারণ করে। কারণ মিথ্যা এমন একটি গুনাহ যার দ্বারা একজন ব্যক্তি বা একটি সমাজ নিমিষেই ধ্বংস হয়ে যায়। আর এই মিথ্যা বর্তমান সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়েছে। মানুষ মিথ্যা বলাকে কোনো গুনাহই মনে করে না। প্রত্যেক দিন সে অহরহ মিথ্যা বলে যাচ্ছে। আর রোজা পালনকালে কোনোরূপ মিথ্যাচারে লিপ্ত হলে সেই রোজা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। এ কারণে প্রিয় নবীজী (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও মিথ্যাচার করা বর্জন করে না, তার খাওয়া-দাওয়া ও পানীয় গ্রহণ পরিত্যাগ করার আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই। (বুখারি শরিফ)
আদর্শ ব্যক্তিজীবন গঠনে রোজার ভূমিকা অনন্য। রোজা পালনের মাধ্যমে মানুষ প্রবৃত্তির তাড়না থেকে মুক্তিলাভ করে। ফলে একজন রোজাদার ব্যক্তি সব ধরনের লোভ-লালসা, ক্রোধ, নেশা, মিথ্যা, প্রতারণা, প্রবঞ্চনা, গীবত, শেকায়েত, পরনিন্দা, ঝগড়া-ফ্যাসাদ ও অশ্লীলতা প্রভৃতি থেকে মুক্ত থাকে।
এই প্রশংসিত স্বভাব নিয়ে সুন্দর থেকে সুন্দরতম জীবন গঠন করা অতি সহজ একটি বিষয়। প্রিয় পাঠক! লক্ষ্য করুন। সিয়াম সাধনা একজন ব্যক্তির জীবনে কীরূপ প্রভাব বিস্তার করে। অসুন্দর জীবনকে সুন্দরতম করে তোলে। তবে শর্ত হলো, সিয়াম সাধনা থেকে নিয়ে জীবনের সকল নেক আমলগুলো করতে হবে একমাত্র আল্লাহর জন্য। আল্লাহর সন্তুষ্টিই হবে আমাদের জীবনের একমাত্র মাকসাদ। তাহলেই আমরা প্রকৃতভাবে সিয়াম সাধনার দ্বারা উপকৃত হতে পারব। ইনশা আল্লাহ।
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে সুন্দরতম জীবন গঠন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।