মোঃ বাবুল রানা,
দৈনিক ভোলাটাইমস:: ভোলায় দিন দিন ছড়িয়ে পড়েছে শিশুদের নিউমোনিয়াসহ জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট জেলার হাসপাতালে এখন শিশু রোগীদের চাপ।
হাসপাতালগুলোতে রোগীদের চাপ বেড়ে যাওয়ায় তাদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। গত এক সপ্তাহে জেলায় দুই শতাধিক রোগী ভর্তি হলেও ২৩৬ জন শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।
অন্যদিকে, বেড সংকট থাকায় একটি বেডে গড়ে ২-৩ জন রোগীকে গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিতে দেখা গিয়েছে এবং বাধ্য হয়ে রোগীদের হাসপাতালের বারান্দায় বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে অভিভাবকদের।
তবে চিকিৎসকরা বলছেন- আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে শিশুদের নিউমোনিয়াসহ জ্বর, সর্দি, কাশি, বেড়েছে।
ভোলার ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুর বাবা মোঃ আল আমিন বলেন, ৮ মাসের শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে রয়েছি। গত পাঁচদিন ধরে শিশুর জ্বর ঠান্ডা ও কাশি হয়েছে। আমাদের বেডে চাপাচাপি অবস্থায় দুইজন রোগীর কষ্ট হচ্ছে, তবুও বাধ্য হয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
আরেক অভিভাবক নাজমা বলেন, হঠাৎ করেই শিশুদের নিউমোনিয়া বেড়েছে, আমরা সন্তানদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি বেড সংকট থাকায় এক বেডে দুইজন করে চিকিৎসা নিতেছি।
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, শিশু রোগীদের চাপ বেশি। শিশুকে নিয়ে তাদের মা-বাবারা বসে আছেন। একদিকে গরম অন্যদিকে বেডে গড়ে ২-৩ জন করে রোগী চিকিৎসা নেওয়ায় পরিস্থিতি অনেকটা সামলে নিতে পারছেন না তারা। তবুও অসুস্থ সন্তানদের নিয়ে হাসপাতালের বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন অভিভাবকরা। শিশুদের চিকিৎসার কথা মাথায় রেখে কষ্ট সহ্য করেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।
কয়েকজন অভিভাবক জানালেন, আমরা শিশুদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি, তার ওপর আবার বেড না পেয়ে হাসপাতালের বারান্দায় ঠাণ্ডা ফ্লোরে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। তবে ডাক্তার ও নার্স সংকট থাকায় ঠিকমতো চিকিৎসা পাচ্ছি না।
শিশু ওয়ার্ডের তথ্য মতে জানা গেল, জানুয়ারি মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ভোলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৬ হাজার ৫ জন শিশু। যাদের মধ্যে নিউমোনিয়া এবং জ্বর সর্দি কাশি আক্রান্ত ছিল।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৬৩জন নিউমোনিয়াসহ জ্বর সর্দি কাশি আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ২৩৬ জন। যাদের বেশিরভাগ নিউমোনিয়া আক্রান্ত।
শিশু ওয়ার্ডের দায়িত্বরত নার্সরা জানান, যারা চিকিৎসা নিতে আসছেন তাদের বেশিরভাগ নিউমোনিয়া আক্রান্ত। ফলে আমাদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
কয়দিনের টানা বর্ষণ, প্রচণ্ড গরম আর আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে শিশুদের রোগ ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানালেন ২৫০ শয্যা জেনালের হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: মনিরুল ইসলাম তিনি বলেন, শিশু ওয়ার্ডে যেসব রোগী ভর্তি হচ্ছে, তাদের বেশিরভাগ নিউমোনিয়া আক্রান্ত। আমরা তাদের সেবা দিচ্ছি। হাসপাতালে কোনো ওষুধের সংকট নেই। তবে ডাক্তার-নার্স সংকট থাকায় চিকিৎসা সেবা কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে। কিন্তু আমরা সাধ্যমতো চিকিৎসা দিচ্ছি। বর্তমানে নিউমোনিয়া পরিস্থিতি বেশি হওয়ার কারণ হতে পারে আবহাওয়া পরিবর্তন।