ঘূর্ণিঝড় আম্পান:ঝড়ের আগাম বার্তা পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই আতঙ্কিত উপকূলের মানুষ

ভোলা:  নদীর পাড়ে একা বসে এক মনে পানির দিকে তাকিয়ে কী যেন ভাবছিলেন বৃদ্ধ বাদশা মিয়া। ঝড়ের কথা জানেন কিনা এমন প্রশ্ন করতেই জবাবে  তিনি বলেন, ঝড়ের কথা শুনছি, ঝড় আসবে তাও জানি। করোনার ভয়ের মধ্য যদি আবার এই ঝড় শুরু হয় তাহলে আমাদের কী কোনো উপায় থাকবে। আমরা গরিব মানুষ। আমাদের কী হবে। এভাবেই ঝড় নিয়ে দুশ্চিন্তার কথাগুলো জানিয়েছেন বাদশা মিয়া। ঝড়ের আগাম বার্তা পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই কর্মহীন এসব মানুষ যেন অজানা আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা মধ্যে পড়েছেন। নিরাপদ আশ্রয় কিংবা জীবন বাঁচানোর চিন্তা না করে নিজেদের বসতঘর আর সম্পদ রক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন তারা। ঝড়ে না জানি কি হয়, এমন চিন্তার তাদের চোখ-মুখে। এদিকে ঝড় মোকাবিলায় ৩টি ধাপে প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। ঘূর্ণিঝড়ের আগে, ঝড়ের সময় এবং ঝড় পরবর্তী সময়ে করণীয় বিষয়ে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এদিকে দরিদ্র পরিবারের সন্তান ফাতেমা বলেন, ঝড়ের কথা শুনেছি, আমরা ভয়ের মধ্যে আছি। যদিও করোনার কারণে কষ্টে দিন কাটছে, বেশি কিছু হলে আশ্রয় কেন্দ্রে যাবো কিন্তু ঝড়ে যদি ঘর ভেঙে যায়, তাহলে কোথায় আশ্রয় নেব। এদিকে ঝড়ের প্রভাবে অশান্ত হয়ে উঠেছে ভোলার নদী-নদীগুলো। শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করে মানুষকে রাখার জন্য আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে এক হাজারের বেশি সাইক্লোন সেল্টার রয়েছে। সেগুলোতে চলছে পরিচ্ছন্নতার কাজ।  ঝড় মোকাবিলা আর উপকূলের বাসিন্দাদের নিরাপদে আনতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভোলার জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম ছিদ্দিক। তিনি বলেন, করোনার কারণে আশ্রয় কেন্দ্রে যাতে মানুষের শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত হয় সে জন্য ১১০৪টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনতে কাজ করছে সিপিপিসহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ উপজেলা প্রশাসন, নির্বাহী কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদ সবাই একযোগে কাজ শুরু করেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উপকূলের সব বাসিন্দারের নিরাপদে আনতে চাই। সেই লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও মেডিক্যাল টিম ও কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। জেলা পুলিশ, নৌ পুলিশ, নৌ বাহিনী ও কোস্টগার্ডের সহায়তায় ঝূঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে আনা হচ্ছে। এছাড়াও আশ্রয় নেওয়া বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী, অন্তঃসত্ত্বা নারী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য আলাদা টিম গঠন করেছি, তারা তাদের যত্ন করবে। ইতোমধ্যে কয়েক দফা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।